রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫২ অপরাহ্ন
কালের খবর ডেস্ক :
বাংলাদেশে কোনোভাবেই শ্রীলঙ্কার দৃষ্টান্তের পুনরাবৃত্তি ঘটানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রবিবার (৭ জুলাই) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুদ্ধাচার পুরস্কার দেওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি গতকালও (শনিবার) সচিব মহোদয়কে বলেছিলাম, আমাদের অর্থনৈতিক যে সংকট, সেটা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে, প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দিতে হবে। কোনও অবস্থাতেই শ্রীলঙ্কার দৃষ্টান্তের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাই না। বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার যে ভুল, সেটা পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, সেটাও আমাদের দেখতে হবে।’
ভালো কাজের জন্য পুরস্কার, খারাপ কাজের জন্য তিরস্কার; দুটোই দরকারি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিবসহ প্রধান প্রধান কর্মকর্তা, আমরা যদি সৎ থাকি, তাহলে দুর্নীতি হওয়ার সুযোগ নেই। অনেকের জন্য বেপরোয়া গতিতে দুর্নীতির বিস্তার লাভ করে, ধরা পড়ে অনেক পরে। দুর্নীতির জন্য আমাদের যে মূল্য দিতে হয়, সেটা আমাদের জন্য সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক, দুঃখজনকও বটে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঐতিহ্যগত দুর্নীতি বন্ধ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই মন্ত্রণালয়ের ঐতিহ্যগতভাবে যেটা চলতো, সেটা অন্তত বন্ধ করা হয়েছে। কমিশন, পার্সেন্টেজ এক সময় এখানে নিয়ম হিসেবে চালু ছিল। এখানে পদোন্নতি ও ট্রান্সফার নিয়ে অনেক কথা ছিল। সময় হওয়ার আগে একজন প্রকৌশলী নিজের পছন্দমতো জায়গায় বদলি হয়ে যেতেন; এসব চর্চা বন্ধ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান প্রকৌশলী থেকে শুরু করে প্রকৌশলী পদে আসার জন্য এবং এখানে পদায়ন ও পদোন্নতির জন্য যে লেনদেন হতো, সেটা আমি মন্ত্রী হয়ে অনেক কথা শুনে, অনেক গল্প শুনে খুবই দুঃখ পেয়েছিলাম। এটা কেন হবে? আমি আমাদের বিশেষ করে বিআরটিএ এবং সড়ক ও মহাসড়ক, সবাইকে একটা কথা বলে দিয়েছি, কোনো রাজনৈতিক তদবিরে কাউকে বদলি করা যাবে না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিআরটিএ এক সময় এমন ছিল যে, এখানে লেনদেন হতো এবং বিনিময়ে প্রভাবশালীরাও তদবির করতেন। সেটা অনেকাংশে বন্ধ হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। তবে বেশ কয়েকটি জেলায় বিআরটিএর অভ্যন্তরে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে অপকর্ম হতে পারে। সরষের মধ্যে দালালের মতো ভূত যখন নিরাপদ আশ্রয় পায়; এসব বিষয় আমি আবারও মনে করিয়ে দিলাম।’
‘আমাদের অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করতে হবে। সর্বাধিক অগ্রাধিকার কোনটি? জনস্বার্থে কোন প্রকল্পটি আমাদের বাস্তবায়ন করা দরকার? সেটা সবার আগে দেখা উচিত। আমরা চলমান প্রকল্পগুলোর ওপরই গুরুত্ব দেবো,’ যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
বিভিন্ন বড় প্রকল্পের অগ্রাধিকার নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, মেট্রোরেলে আমাদের উত্তরা থেকে কমলাপুরের যে প্রকল্প, এটার বিষয়ে আমরা যতদ্রুত সম্ভব, অবশ্যই মতিঝিল পর্যন্তই এই প্রকল্প খুব গুরুত্বপূর্ণ, যেটা হয়ে গেছে। এরপর আমি বলতে চাই, এখানে ছয়টি এমআরটি লাইন, পরে দেখা যাবে, যদি বিনিয়োগ পাই। আমাদের নিজেদের এমন কোনও অর্থ নেই, যেটা দিয়ে এমন মেগাপ্রকল্প, যেখানে ৫০, ৫১ ও ৫২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প।’
‘চলমান যে দুটো প্রকল্প, একটি হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা, আরেকটা কমলপুর থেকে পূর্বাচল হয়ে বিমানবন্দর ৩১ কিলোমিটারের মধ্যে পাতাল রেল; তারপর আরেকটা ১৩ কিলোমিটারের পাতাল রেল, এই দুটো প্রকল্প চলমান আছে। জনস্বার্থেও দরকার। এতে বিদেশি তহবিলও আছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমার জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার প্রকল্প, জাইকা যেটিতে সম্মতি দিয়েছে। সম্ভবত কাজে হাত দিতে পারবো। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। আরেকটি প্রকল্প, আমি বলেছি যশোর-খুলনা। এ প্রকল্প দীর্ঘদিন আমাদের ভোগাচ্ছে। এটাকেও গুরুত্ব দিচ্ছি।’